CWSA Set of 37 volumes
Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 of CWSA 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

Editions

ABOUT

All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.

Writings in Bengali and Sanskrit

Sri Aurobindo symbol
Sri Aurobindo

All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)

The Complete Works of Sri Aurobindo (CWSA) Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

বাংলা রচনা




“ধর্ম” পত্রিকার সম্পাদকীয়




সম্পাদকীয় – ১

ধৰ্ম্ম, ১ম সংখ্যা, ৭ই ভাদ্র, ১৩১৬

প্রাদেশিক সমিতির অধিবেশন

প্রাদেশিক সমিতির অধিবেশন আগতপ্রায় ৷ গতবৎসর পাবনার অধিবেশনে বঙ্গদেশের সমবেত প্রতিনিধিগণ বােম্বে-নীতি বৰ্জন করিয়া বঙ্গদেশে ঐক্য রক্ষা করিয়াছিলেন ৷ আমাদের বিশ্বাস হুগলীর অধিবেশনেও সেই শুভপথ অনুসরণ করা হইবে ৷ শুনিয়া সুখী হইলাম, হুগলীর অভ্যর্থনা সমিতি পাবনার প্রস্তাব-সকলের উপর লক্ষ্য রাখিয়া এই অধিবেশনের প্রস্তাবগুলি রচনা করিতে প্রয়াসী হইয়াছেন ৷ বিশেষ আবশ্যক বিষয় দুইটাই আছে ৷ আজকাল রাজনীতিক বয়কট বৰ্জন করিয়া নুন চিনির বয়কটই বজায় রাখিবার বিশেষ আগ্রহ অনেক বিজ্ঞ ব্যক্তির মনে জন্মিয়াছে ৷ আশা করি এই বিজ্ঞতা বঙ্গদেশের প্রতিনিধিবর্গের প্রিয় হইয়া সৰ্ব্বসম্মতিক্রমে প্রত্যাখ্যাত হইবে ৷ দ্বিতীয় আবশ্যক বিষয় জাতীয় মহাসভা ৷ পাবনায় এই সম্বন্ধে যে প্রস্তাব গৃহীত হইয়াছিল, সে প্রস্তাবই হইয়া রহিল, তাহা কাৰ্য্যে পরিণত করিবার লেশমাত্র চেষ্টা হয় নাই ৷ এইবার সমগ্র বঙ্গদেশের মত ও আকাঙক্ষা যাহাতে উপেক্ষিত না হয় সেইরূপ ব্যবস্থা করা প্রাদেশিক সমিতির প্রধান কর্ত্তব্য ৷


অশোক নন্দীর পরলোক প্রাপ্তি

আলিপুর বােমার মােকদ্দমায় অভিযুক্ত যুবক অশােক নন্দী ক্ষয়রােগে দেহ-মুক্ত হইয়াছেন ৷ জেলের কষ্ট ক্ষয়রােগের একমাত্র কারণ ৷ যাঁহারা এই যুবককে চিনিতেন, তাঁহারা সকলেই জানেন যে, কোনও হত্যাকাণ্ডে বা ষড়যন্ত্রে অশােক নন্দীর পক্ষে সংলিপ্ত হওয়া সম্পূর্ণ অসম্ভব ৷ তিনি অতিশয় শান্ত, নিরীহ, ধার্মিক ও প্রেমধর্মপরায়ণ ছিলেন ৷ তিনি জেলে যােগপথে অনেক অগ্রসর হইয়া মৃত্যুসময়ে যােগারূঢ় অবস্থায়ই ভগবানের নাম স্মরণ করিতে করিতে ধরাধাম পরিত্যাগ করিলেন ৷ তঁাহার কতক পরিচয় বারান্তরে দেওয়া হইবে ৷


হেয়ার স্ট্রীটে সরলতা

আমাদের হেয়ার স্ট্রীট নিবাসী সহযােগীর সরলতা দেখিয়া আমরা প্রীত হইলাম ৷ সহযােগীর মতপ্রকাশে লুকোচুরির অভ্যাস নাই ৷ সত্যকথা বলিতে হইলে সরল বালকের ন্যায় বলিয়া ফেলে; মিথ্যাকথার যদি প্রয়ােজন হয় সত্য মিথ্যা মিশ্রিত না করিয়া বালকের মত উদারভাবে সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা উদগীরণ করে ৷ কিচেনারের সৈন্যসংস্কারের সম্বন্ধে সেইদিন পার্লামেন্টে বাদবিবাদ হইয়াছিল; সেই উপলক্ষ্যে স্বনামধন্য সার এডওয়িন কলিন এই মত ঘােষণা করিয়াছেন যে, এই সৈন্যসংস্কারে যে ভারতের জাতীয় সেনা সৃষ্ট ও গঠিত হইতেছে, তাহাতে ভারতের জাতীয় দলের উদ্দেশ্যের সাহায্য ও পােষকতা করা হইয়াছে ৷ ইংলিশম্যানও এই মতে মত দিয়াছে ৷ এই পর্যন্ত সৈন্যগঠনে ভেদনীতি সযত্নে রক্ষিত হইয়া আসিয়াছে, যাহাতে পল্টনে পল্টনে সহানুভূতি ও একতা না হয়, ভারতের ভিন্ন ভিন্ন জাতির হৃদয়ে একপ্রাণতা না আসে, সেই চেষ্টা ও লক্ষ্য কখনও পরিবর্জিত হয় নাই ৷ লর্ড কিচেনার এই সকল ভেদ বিনাশ করিয়া বৃটিশ সাম্রাজ্যের প্রধান স্তম্ভ উল্টাইয়া ফেলিয়াছেন ৷ ইহাতে সহযােগী স্বীকার করিয়াছেন যে, এখনকার স্বেচ্ছাতন্ত্র ভারতের জাতীয় একতার প্রতিকূল ও বিরােধী ছিল ৷ একতার অভাবে ভারতের উন্নতির পথ হয় নাই ৷ অতএব যে স্বেচ্ছাতন্ত্র তাহার প্রধান পৃষ্ঠপােষকের কথায় দেশের উন্নতির প্রতিকূল বলিয়া প্রমাণিত হইয়াছে, সেই স্বেচ্ছাতন্ত্রকে বৈধ উপায়ে প্রজাতন্ত্রে পরিণত করিবার চেষ্টা ভারতবাসীর পক্ষে দোষাবহ না হইয়া স্বাভাবিক, অনিবাৰ্য্য এবং যেমন ভারত তেমনই বিলাতের মঙ্গলপ্রদ প্রতিপন্ন করা হইল ৷


বিলাত-যাত্রায় লাভ

আমাদের পরমপূজনীয় দেশনায়ক ও শ্রেষ্ঠ বক্তা শ্রীযুক্ত সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বিলাতে বিশেষ সম্মানিত হইয়া ফিরিয়া আসিয়াছেন ৷ সেই সম্মানলাভে আমরাও প্রীত হইলাম ৷ আমাদের একজন বক্তা ইংরাজী ভাষায় বিলাত্রে শ্রেষ্ঠ বাগ্মীসকলের সমান প্রতিভা, ভাষালালিত্য ও ওজস্বিতা দেখাইয়া বিপক্ষেরও প্রশংসা ও সম্মান লাভ করিয়াছেন, তাহাতে দেশের গৌরবও বৃদ্ধি হইল, বাঙ্গালীর বুদ্ধির শ্রেষ্ঠতাও প্রমাণিত হইল ৷ তথাপি এত পরিশ্রমের ফল যদি ব্যক্তিগত সম্মানেই সীমাবদ্ধ হয়, তাহা হইলে সুরেন্দ্রবাবুর বিলাত যাত্রা ব্যক্তির পক্ষে সন্তোষজনক হইলেও দেশের পক্ষে বিফল চেষ্টা বলিতে হয় ৷ আমরা ইংরাজের নিকট বুদ্ধির প্রশংসা ও বাগিতার আদর অর্জন করিতে ব্যগ্র নহি, জাতির অধিকার সকল আদায় করিতে চাহিতেছি ৷ সুরেন্দ্রবাবুর তিন মাস প্রবাসে ও ঘন ঘন বক্তৃতায় ইংরাজ জাতি যে এই উদ্দেশ্যের কিঞ্চিত্র অনুকূল হইয়াছে, তাহার কোনও লক্ষণ দেখিতেছি না ৷ উহারা মধ্যপন্থী দলের রাজভক্তির সম্বন্ধে কতকটা আশ্বস্ত হইয়াছেন মাত্র ৷ ইহাতে সুরেন্দ্রবাবু মধ্যপন্থী দলের কৃতজ্ঞতাভাজন ও ধন্যবাদের যােগ্য হইয়াছেন, সন্দেহ নাই ৷ কিন্তু তিনি বিলাতে দেশের প্রভূত সেবা ও উপকার করিয়া আসিয়াছেন বলিয়া যে অজুহাতে তঁহার সম্মাননা হইতেছে তাহা অমূলক ৷ সুরেন্দ্রবাবু পূজাৰ্হ ও সম্মাননীয় বলিয়া বিদেশ হইতে পুনরাগমনকালে তাহাকে পূজা ও সম্মান করা স্বাভাবিক ও প্রশংসনীয়; অন্য অলীক কারণ দেখাইবার প্রয়ােজন ছিল না ৷ দেশসেবার মধ্যে তিনি বিলাতে আমাদের রাজনীতিক অধিকারের দাবী জানাইয়া আসিয়াছেন ৷ উপকারের মধ্যে আন্দোলনের সম্বন্ধে কয়েকজনের ব্যক্তিগত মত অল্পমাত্র সংশােধিত হইতেও পারে ৷ আমরা এই অল্পলাভে আমাদের রাজনীতির উদ্দেশ্যের দিকে এক পদও অগ্রসর হই নাই ৷


লণ্ডনে জাতীয় মহাসভা

শ্ৰীযুক্ত সুরেন্দ্রনাথ যৌবনকাল হইতে ঊনবিংশ শতাব্দীর নিবেদন-প্রধান কাতর রাজনীতিতে অভ্যস্ত, স্থানে স্থানে ইংরাজদের “জয়জয়কার” শ্রবণ করিয়া আবার সেই বিফল নীতিতে বিশ্বাসস্থাপন ও নিবেদন-প্রবণতাকে পুনরুজ্জীবিত করিবার চেষ্টা তাহার পক্ষে এই বিদেশযাত্রার অনিবাৰ্য্য ফল ৷ এখন জিজ্ঞাস্য এই, শ্রীযুক্ত সুরেন্দ্রনাথ যাহাই করুন, দেশবাসী এবং বিশেষতঃ বঙ্গবাসী, তাহার এই বৃথা চেষ্টায় সাহায্য করিতে প্রস্তুত কি? কোনও ব্যক্তিগত মত দ্বারা এই জাতি আর পরিচালিত হইতে পারে না ৷ উদ্দেশ্য, প্রয়ােজন ও যুক্তি দেখিয়া দেশের পক্ষে যাহা কল্যাণকর, রাজনীতিক্ষেত্রে যাহা সিদ্ধিদায়ক, শক্তি ও অর্থব্যয়ের তুলনায় যাহার ফল সন্তোষজনক, তাহাই আমাদের অনুষ্ঠেয় ৷ সুরেন্দ্রবাবু যে “জয়জয়কারে” ভুল বিশ্বাস করিয়া পুরাতন পথে ফিরিয়া যাইতে ব্যস্ত হইয়াছেন, সে তাহার অসাধারণ বাগ্মিতার প্রশংসা; তাঁহার রাজনীতিক মতের সমর্থন অথবা রাজনীতিক দাবীর অনুকূলতা-প্রকাশক নয় ৷ যাঁহারা ভারতের উন্নতির প্রধান বিরুদ্ধাচারী, তাহারাও এই “জয়জয়কারে” উচ্চকণ্ঠে যােগ দিয়াছেন ৷ ইহাতে কি বােঝা গেল যে, তাহারা ভবিষ্যতে আমাদের স্বায়ত্তশাসন বা স্বাধীনতার অনুকূল আচরণ করিবেন? ইহা কখনও সম্ভব নয় ৷ এই বাগ্মিতাপ্রভাবে তাঁহাদের মত ও আচরণ কিঞ্চিত্র পরিবর্তিত হয় নাই ৷ যদি সুরেন্দ্রবাবুর বক্তৃতায় কোন বিশেষ বা স্থায়ী ফল হইল না, তবে কি গােখলে, মেহতা, মালবিয়া, কৃষ্ণস্বামীর মিলিত বক্তৃতাস্রোতে ইংরাজের কঠিন মন এতই ভিজিবার আশা আছে যে এই ভূতশ্রাদ্ধে আমরা অজস্র টাকা ঢালিতে বাধ্য? ইংরাজ জাতি কাৰ্য্যপটু ও বিচক্ষণ, কেবলমাত্র বক্তৃতায় ভুলে না, স্বার্থ ও দেশের হিত দেখিয়া রাজনীতিক পন্থা নির্ধারণ করে ৷ আমরা আগে জানিতাম উহাদের নিকট ভারতের দুঃখ, কর্মচারীদের অত্যাচার জ্ঞাপন করিতে পারিলে বৃটিশ প্রজাতন্ত্রের এক কথায়ই আকাশ হইতে স্বর্গ নামিয়া আসিবে ৷ সেই ভ্রান্তি ঘুচিয়া গিয়াছে, আবার কেহ যেন সেই পুরাতন মােহ উৎপাদন করিবার প্রয়াস না পান, পাইলেও দেশ শুনিবে না ৷ ইংরাজ জাতিকে এমন বৃহৎ কি স্বার্থ দেখাইতে পারি যাহাতে তাহারা জাতীয় গর্ব, লাভ ও প্রভুত্ব পরিত্যাগ করিয়া একটী কৃষ্ণবর্ণ জাতির হস্তে বিজিত দেশের সমস্ত শাসনভার ছাড়িতে পারে এবং কোন্ উপায়ে সেই বৃহৎ স্বার্থের প্রয়ােজনীয়তা তাহাদের হৃদয়ঙ্গম হইতে পারে, ইহাই বিবেচ্য ৷ সাম্রাজ্যরক্ষা ভিন্ন এমন কোন বৃহৎ স্বার্থ নাই ৷ সাম্রাজ্যরক্ষার আশায় স্বায়ত্তশাসন দেওয়া ইংরাজ রাজনীতিতে নূতন পন্থা নয় তবে এই উপায়ের প্রয়ােজনীয়তা তাহাদের সম্পূর্ণ হৃদয়ঙ্গম না হওয়া পর্যন্ত তাহাদের নিকট প্রকৃত উপকারের আশা অসঙ্গত ৷ তাহাদের মনে সেই জ্ঞান জন্মাইবার একই পথ নিস্ক্রিয় প্রতিরােধ ৷









Let us co-create the website.

Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.

Image Description
Connect for updates