CWSA Set of 37 volumes
Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 of CWSA 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

Editions

ABOUT

All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.

Writings in Bengali and Sanskrit

Sri Aurobindo symbol
Sri Aurobindo

All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)

The Complete Works of Sri Aurobindo (CWSA) Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

বাংলা রচনা




“ধর্ম” পত্রিকার সম্পাদকীয়




সম্পাদকীয় – ১৭

ধৰ্ম্ম, ১৭শ সংখ্যা, ১২ই পৌষ, ১৩১৬

প্রস্থান

লাহােরের ধনীপুঙ্গব হরকিসনলালের নিমন্ত্রণ রক্ষা করিতে যাঁহারা প্রস্থান করিয়াছেন, কনভেন্সন যজ্ঞে মরলীর শ্রীচরণে স্বদেশকে বলি দিতে, শাসনসংস্কার পেষণযন্ত্রে জন্মভূমির ভাবী ঐক্য ও স্বাধীনতা পিষিয়া খণ্ড খণ্ড করিতে বসিয়াছেন ৷ বলিয়া ভারতসচিবকে ধন্যবাদ দিতে যাঁহারা সানন্দে মহাসুখে নৃত্য করিতে করিতে যাইতেছেন, তাহারা দেশের নেতা, সন্ত্রান্ত, ধনীলােক, দেশে তাঁহাদের “Stake” আছে, সম্মান আছে, প্রতিপত্তি আছে ৷ বােধ হয় এই ধনসম্পত্তি সম্মান প্রতিপত্তি ইংরাজদের দত্ত, মায়ের দত্ত নহে বলিয়া তাঁহারা কৃতঘ্নতা অপবাদের ভয়ে জন্মভূমিকে ৷ উপেক্ষা করিয়া মরলীকেই ভজিতেছেন ৷ দরিদ্র মা একদিকে, বরদাতা, শান্তিরক্ষক, সম্পত্তিরক্ষক গবর্ণমেণ্ট অপরদিকে, যাঁহারা মাকে ভালবাসেন, তাঁহারা একদিকে যাইবেন; যাঁহারা নিজেকে ভালবাসেন, তাহারা অপরদিকে যাইবেন; কিন্তু আর দুইদিকে থাকিবার চেষ্টা যেন না করেন, দুই দিকের দেয় পুরস্কার ও সুবিধা ভােগ করিবার দুরাশা যেন পােষণ না করেন ৷ যাঁহারা কনভেন্সনে যােগদান করিতে প্রস্থান করিয়াছেন, তাহারা নিজ লােকপ্রিয়তা, দেশবাসীর হৃদয়ে প্রতিপত্তি ও দেশহিতৈষিতার গৌরব পদতলে দলন করিয়া সেই কুস্থানে ছুটিতেছেন ৷ এই প্রস্থান তাঁহাদের রাজনীতিক মহাপ্রস্থান ৷


হরকিসনলালের অপমান

তেজস্বী স্বদেশহিতৈষী ইংরাজ কখনও দেশদ্রোহীর সম্মান করিতে ভালবাসেন না ৷ যদি স্বীয় উদ্দেশ্যসিদ্ধির জন্য কয়েকদিন মৌখিক ভদ্রতা ও প্রীতি দেখান, তথাপি হৃদয়ে অবজ্ঞা ও অসম্মানের ভাব লক্কায়িত হইয়া থাকে ৷ পঞ্জাবের হরকিসনলাল মনে করিয়াছিলেন, আমি রাজপুরুষদের অতীব প্রিয়, পঞ্জাবের লােকমত দলন করিয়া কভেন্সন করিতেছি, রাজপুরুষদের সাহায্যে স্বদেশী বস্তুত্র প্রদর্শনী করিতেছি, গবর্ণমেন্টের নিকট আমার সকল আব্দার রক্ষিত হইবে ৷ হরকিসনলাল পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হইবার জন্য লালায়িত, তাহার নামও নির্বাচন-প্রার্থীদের মধ্যে করা হইয়াছিল ৷ কিন্তু কোন নিয়মভঙ্গের জন্য সেই নাম গ্রহণ করা হয় নাই ৷ ইহাতে লালাজীর প্রাণে বড় ব্যথা লাগিয়াছে ৷ কভেন্সনের হরকিসনলাল, গবর্ণমেন্টের হরকিসনলাল, প্রতিনিধি হইবেন না, নাম পৰ্য্যন্ত গ্রহণ করে নাই, এ কিরূপ কথা, কাহার এত বড় ধৃষ্টতা, র’স গবর্ণমেন্টকে লিখি, সকলকে মজা দেখাইব ৷ কিন্তু হরকিসনলালের আবেদনে বিপরীত ফল হইল ৷ পঞ্জাব গবর্ণমেণ্ট লালাজীকে অপদস্থ করিয়া এক কথায় তাঁহার আবেদন অগ্রাহ্য করিয়া বলিয়াছেন, নিয়ম অনুসারে হরকিসনলালের নাম প্রত্যাখ্যাত হইয়াছে, প্রত্যাখ্যাতই থাকিবে ৷ ন্যায্য কথা, ব্যক্তির খাতিরে নিয়মভঙ্গ সভ্য রাজতন্ত্রের প্রথা নহে ৷ কিন্তু হরকিসনলাল যখন মরলী ও মিন্টোর মনস্তুষ্টির জন্য প্রাণপণে খাটিয়াছেন, নাম প্রত্যাখ্যান করিবার পূর্বে তাহাকে সতর্ক করিতে পারিতেন, ভুল সংশােধন করা যাইত ৷ আমরা বুঝি, জানিয়া শুনিয়া এই অপমান করা হইয়াছে, মধ্যপন্থীদলকে শিখাইবার জন্য করা হইয়াছে ৷ রাজপুরুষেরা মধ্যপন্থীদিগকে স্বপক্ষে আকর্ষণ করিতে চান, কিন্তু কিরূপ মধ্যপন্থী? যে মধ্যপন্থী একহাতে গবর্ণমেন্টের পা টিপিতে, এক হাতে গলা টিপিতে অভ্যস্ত, গবর্ণমেন্টের নিন্দাও করিবেন, তাঁহাদের অনুগ্রহের দানও আদায় করিবেন, সেইরূপ মধ্যপন্থীর আর ইংরাজের বাজারে দর নাই ৷ সম্পূর্ণ রাজভক্ত, সম্পূর্ণ সহকারিতা করিবেন, সেইরূপ মধ্যপন্থী হও, নচেৎ চরমপন্থীর ন্যায় তােমরাও বহিষ্কৃত হইবে ৷ নূতন কৌন্সিলের নিয়মাবলীর যে উদ্দেশ্য, হরকিসনলালের অপমান করিবারও সেই উদ্দেশ্য ৷


আবার জাগ

বঙ্গবাসী, অনেকদিন ঘুমাইয়া রহিয়াছ, যে নব-জাগরণ হইয়াছিল, যে নব-প্রাণ সঞ্চারক আন্দোলন সমস্ত ভারতকে আন্দোলিত করিয়াছিল, তাহা নিস্তেজ হইয়া পড়িয়াছে, ম্রিয়মাণ অবস্থায়, অর্ধ-নিৰ্ব্বাণপ্রাপ্ত অগ্নির ন্যায় অল্প অল্প জ্বলিতেছে ৷ এখন সঙ্কটাবস্থা, যদি বাঁচাইতে চাও, মিথ্যা ভয়, মিথ্যা কূটনীতি ও আত্মরক্ষার চেষ্টা বৰ্জন করিয়া কেবলই মায়ের মুখের দিকে চাহিয়া আবার সম্মিলিত হইয়া কাৰ্য্যে লাগ ৷ যে মিলনের আশায় এতদিন অপেক্ষা করিয়াছিলাম, সে আশা ব্যর্থ ৷ মধ্যপন্থীদল জাতীয় পক্ষের সহিত মিলিত হইতে চায় না, গ্রাস করিতে চায় ৷ সেইরূপ মিলনের ফলে যদি দেশের হিত হইত, আমরা বাধা দিতাম না ৷ যাঁহারা সত্যপ্রিয়, মহান আদর্শের প্রেরণায় অনুপ্রাণিত, ভগবান ও ধর্মকে একমাত্র সহায় বলিয়া কৰ্ম্মক্ষেত্রে অবতীর্ণ, তাহারা না হয় সরিয়া যাইতেন, যাঁহারা কূটনীতির আশ্রয় লইতে সম্মত, তাহারা মধ্যপন্থীদের সহিত যােগদান করিয়া, মেহতার আধিপত্য, মরলীর আজ্ঞা শিরােধার্য্য করিয়া দেশের হিত করিতেন ৷ কিন্তু সেইরূপ কুটনীতিতে ভারতের উদ্ধার হইবার নহে ৷ ধৰ্ম্মের বলে, সাহসের বলে, সত্যের বলে ভারত উঠিবে ৷ অতএব যাঁহারা জাতীয়তার মহান আদর্শের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করিতে প্রস্তুত, যাঁহারা জননীকে আবার জগতের শীর্ষস্থানীয় শক্তিশালিনী, জ্ঞানদায়িনী, বিশ্বমঙ্গলকারিণী ঐশ্বরিক শক্তি বলিয়া মানবজাতির সম্মুখে প্রকাশ করিতে উৎসুক, তঁাহারা মিলিত হউন, ধৰ্ম্মবলে, ত্যাগবলে বলীয়ান হইয়া মাতৃকাৰ্য্য আরম্ভ করুন ৷ মায়ের সন্তান! আদর্শভ্রষ্ট হইয়াছ, আবার ধর্মপথে আর উদ্দাম উত্তেজনার বশে যেন কোন কাৰ্য্য না কর, সকলে মিলিয়া এক প্রতিজ্ঞা, এক পন্থা, এক উপায় নির্ধারণ করিয়া যাহা ধৰ্ম্মসঙ্গত, যাহাতে দেশের হিত অবশ্যম্ভাবী, তাহাই করিতে শিখ ৷


নাসিকে খুন

নাসিকবাসী সাবরকর কয়েকটী উদ্দাম কবিতা লিখিয়াছেন বলিয়া ইংরাজ বিচারালয়ে যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরে দণ্ডিত হইলেন, সাবরকরের একজন অল্পবয়স্ক বন্ধু নাসিকের কলেক্টর জ্যাকসনকে হত্যা করিয়া তাহার প্রতিশােধ লইলেন ৷ রাজনীতিক হত্যা সম্বন্ধে আমাদের মত আমরা পূৰ্বেই প্রকাশ করিয়াছি, বার বার সেই কথার পুনরাবৃত্তি করা বৃথা ৷ ইংরাজের পত্রিকাসকল ক্রোধে অধীর হইয়া সমস্ত ভারতের উপর এই হত্যার দোষ আরােপ করিয়া গবর্ণমেন্টকে আরও কঠোর উপায় অবলম্বন করিতে অনুরােধ করিতেছেন ৷ ইহার অর্থ দোষী নির্দোষীকে বিচার না করিয়া যাহাকে সন্দেহ কর, তাহাকে ধর, যাহাকে ধর, তাহাকে নির্বাসিত কর, দ্বীপান্তরে পাঠাও, ফাসীকাষ্ঠে ঝুলাও ৷ যাঁহারা গবর্ণমেন্টের বিরুদ্ধে উচ্চবাচ্য করেন, তাহাদিগকে নিঃশেষ কর ৷ দেশে প্রগাঢ় অন্ধকার, গভীর নীরবতা, পরম নিরাশা ব্যাপ্ত করিয়া ফেলুক, —তাহাতেই যদি রাজদ্রোহের স্ফুলিঙ্গসকল আর প্রকাশ না হয়, গুপ্ত বহ্নি নিবিয়া যায় ৷ এই উন্মত্তের প্রলাপ শুনিয়া, বৃটিশ রাজনীতির শােচনীয় অবনতি দেখিয়া দয়া হয়, বিস্ময়ও হয় ৷ যদি সেই পুরাতন রাজনীতিক কুশলতার ভগ্নাংশও থাকিত, তােমরা জানিতে যে অন্ধকারেই হত্যাকারীর সুবিধা, নীরবতার মধ্যে উন্মত্ত রাষ্ট্রবিপ্লবকারীর পিস্তল ও বােমার শব্দ ঘন ঘন শােনা যায়, নিরাশাই গুপ্ত সমিতির আশা ৷ যাহাতে এই রাজনীতিক হত্যা অবলম্বন করিবার প্রবৃত্তি দেশ হইতে উঠিয়া যায়, আমরাও সেই চেষ্টা করিতে চাই ৷ কিন্তু তাহার একমাত্র উপায়, বৈধ উপায় দ্বারা ভারতের রাজনীতিক উন্নতি ও স্বাধীনতা সাধিত হইতে পারে, ইহাই কাৰ্য্যেতেই দেখান ৷ কেবল মুখে এই শিক্ষা দিলে আর লােকে বিশ্বাস করিবে না, কাৰ্যেতেও বুঝাইতে হইবে ৷ সেই পুণ্য কাৰ্য্যে তােমরাই বাধা দিতে পার ৷ কিন্তু তাহাতে যেমন আমাদের বিনাশ হইবে, তােমাদেরও বিনাশ হইবার সম্ভাবনা ৷









Let us co-create the website.

Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.

Image Description
Connect for updates