CWSA Set of 37 volumes
Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 of CWSA 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

Editions

ABOUT

All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.

Writings in Bengali and Sanskrit

Sri Aurobindo symbol
Sri Aurobindo

All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)

The Complete Works of Sri Aurobindo (CWSA) Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

বাংলা রচনা




গীতা




গীতার ধর্ম

যাঁহারা গীতা মনােযােগপূৰ্ব্বক পড়িয়াছেন, তাঁহাদের মনে হয়ত এই প্রশ্ন উঠিতে পারে যে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বার বার যােগ শব্দ ব্যবহার করিয়াছেন ও যুক্তাবস্থার বর্ণনা করিয়াছেন; কই সাধারণ লােকে যাহাকে যােগ বলে, তাহার সঙ্গে তাহার মিল ত হয় না; শ্রীকৃষ্ণ স্থানে স্থানে সন্ন্যাসের প্রশংসা করিয়াছেন, অনিৰ্দেশ্য পরব্রহ্মের উপাসনায় পরম গতিও নির্দিষ্ট করিয়াছেন, কিন্তু তাহা অতি সংক্ষেপে সাঙ্গ করিয়া গীতার শ্রেষ্ঠাংশে ত্যাগের মহত্ত্ব ও বাসুদেবের উপর শ্রদ্ধায় ও আত্মসমর্পণে পরমাবস্থাপ্রাপ্তি বিবিধ উপায়ে অর্জুনকে বুঝাইয়াছেন ৷ ষষ্ঠ অধ্যায়ে রাজযােগের কিঞ্চিৎ বর্ণনা আছে, কিন্তু গীতাকে রাজযােগাখ্যাপকগ্রন্থ বলা যায় না ৷ সমতা, অনাসক্তি, কৰ্ম্মফলত্যাগ, শ্রীকৃষ্ণে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ, নিষ্কাম কৰ্ম্ম, গুণাতীত্য ও স্বধৰ্ম্মসেবাই গীতার মূলতত্ত্ব ৷ এই শিক্ষাকেই ভগবান পরম জ্ঞান ও গৃঢ়তম রহস্য বলিয়া কীৰ্ত্তন করিয়াছেন ৷ আমাদের বিশ্বাস গীতাই জগতের ভাবীধৰ্ম্মের সর্বজনসম্মত শাস্ত্র হইবে ৷ কিন্তু গীতার প্রকৃত অর্থ সকলের হৃদয়ঙ্গম হয় নাই ৷ বড় বড় পণ্ডিত ও শ্রেষ্ঠ মেধাবী তীক্ষবুদ্ধি লেখকও ইহার গূঢ়ার্থ গ্রহণে অক্ষম ৷ একদিকে মােক্ষপরায়ণ ব্যাখ্যাকৰ্ত্তা গীতার মধ্যে অদ্বৈতবাদ ও সন্ন্যাসধৰ্ম্মের শ্রেষ্ঠতা দেখিয়াছেন, অপরদিকে ইংরাজ-দর্শনসিদ্ধ বঙ্কিমচন্দ্র গীতায় কেবলমাত্র ধীরভাবে কৰ্ত্তব্যপালনের উপদেশ পাইয়া সেই অর্থই তরুণ-মণ্ডলীর মনে ঢুকাইবার চেষ্টা করিয়াছেন ৷ সন্ন্যাসধৰ্ম্ম উৎকৃষ্ট ধৰ্ম্ম, সন্দেহ নাই, কিন্তু সে ধৰ্ম্ম অল্পসংখ্যক লােক আচরণ করিতে পারে ৷ সৰ্বজনসম্মত ধৰ্ম্মে এমন আদর্শ ও তত্ত্বশিক্ষা থাকা আবশ্যক যে সৰ্বসাধারণে তাহা স্ব স্ব জীবনে ও কর্মক্ষেত্রে উপলব্ধি করিতে পারে, অথচ সেই আদর্শ সম্পূর্ণ আচরণ করায় অল্পজনসাধ্য পরমগতি প্রাপ্ত হইবে ৷ ধীরভাবে কৰ্ত্তব্যপালন উৎকৃষ্ট ধর্ম বটে, তবে কর্তব্য কি, এই জটিল সমস্যা লইয়া ধর্ম ও নীতির যত বিভ্রাট ৷ ভগবান বলিয়াছেন, গহনা কৰ্ম্মণাে গতিঃ, কি কর্তব্য, কি অকৰ্ত্তব্য, কি কৰ্ম্ম, কি অকৰ্ম্ম, কি বিকৰ্ম্ম, তাহা নির্ণয় করিতে জ্ঞানীও বিব্রত হইয়া পড়েন, আমি কিন্তু তােমাকে এমন জ্ঞান দিব যে তােমার গন্তব্যপথ নির্ধারণে বেগ পাইতে হইবে না, কর্মজীবনের লক্ষ্য ও সৰ্ব্বদা অনুষ্ঠেয় নিয়ম এককথায় বিশদরূপে ব্যাখ্যাত হইবে ৷ এই জ্ঞানটা কি, এই লাখ কথার এককথা কোথায় পাইব? আমাদের বিশ্বাস গীতার শেষ অধ্যায়ে ভগবান যেখানে তাহার সব্বগুহ্যতম পরম বক্তব্য অৰ্জ্জুনের নিকট বলিতে প্রতিশ্রুত হন, সেইখানেই এই দুর্লভ অমূল্য বস্তু অন্বেষণ করিলে পাওয়া যায় ৷ সেই সৰ্বগুহ্যতম পরম কথা কি?

মন্মনা ভব মক্তো মদ্যাজী মাং নমস্কুরু ৷
মামেবৈষ্যসি সত্যং তে প্রতিজানে প্রিয়ােহসি মে ৷
সৰ্বধৰ্ম্মান পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ ৷
অহং ত্বাং সর্বপাপেভ্যো মােক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ ॥

এই দুটী শ্লোকের অর্থ এক কথায়ই ব্যক্ত হয়, আত্মসমর্পণ ৷ যিনি যত পরিমাণে শ্রীকৃষ্ণের নিকট আত্মসমর্পণ করিতে পারেন, তাঁহার শরীরে তত পরিমাণে ভগবদ্দত্ত শক্তি আসিয়া পরম মঙ্গলময়ের প্রসাদে পাপমুক্ত ও দেবভাবপ্রাপ্ত করে ৷ সেই আত্মসমর্পণের বর্ণনা প্রথম শ্লোকার্ধে করা হইয়াছে ৷ তন্মনা তদ্ভক্ত তদাজী হইতে হয় ৷ তন্মনা অর্থাৎ সৰ্ব্বভূতে তাঁহাকে দর্শন করা, সর্বকালে তাহাকে স্মরণ করা, সর্বকার্য্যে ও সৰ্বৰ্ঘটনায় তঁাহার শক্তি, জ্ঞান ও প্রেমের খেলা বুঝিয়া পরমানন্দে থাকা ৷ তদ্ভক্ত অর্থাৎ তাহার উপর সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা ও প্রীতি স্থাপন করিয়া তাহার সহিত যুক্ত থাকা ৷ তদ্যাজী অর্থাৎ ক্ষুদ্র মহৎ সৰ্ব্বকৰ্ম্ম শ্রীকৃষ্ণ উদ্দেশ্যে যজ্ঞরূপে অর্পণ করা এবং স্বার্থ ও কৰ্ম্মফলে আসক্তি ত্যাগ করিয়া তদর্থে কর্তব্যকর্মে প্রবৃত্ত হওয়া ৷ সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ মানুষের পক্ষে কঠিন, কিন্তু অল্পমাত্র চেষ্টা করিলে স্বয়ং ভগবান অভয়দানে গুরু, রক্ষক ও সুহৃদ হইয়া যােগপথে অগ্রসর করাইয়া দেন ৷ স্বল্পমপ্যস্য ধৰ্ম্মস্য ত্রায়তে মহতাে ভয়াৎ ৷ তিনি বলিয়াছেন এই ধৰ্ম্ম আচরণ করা সহজ ও সখপ্রদ ৷ বাস্তবিকই তাহাই, অথচ সম্পূর্ণ আচরণের ফল অনির্বচনীয় আনন্দ, শুদ্ধি ও শক্তিলাভ ৷ মামেবৈষ্যসি অর্থাৎ আমাকে প্রাপ্ত হইবে, আমার সহিত বাস করিবে, আমার প্রকৃতি প্রাপ্ত হইবে ৷ এই কথায় সাদৃশ্য, সালােক্য ও সাযুজ্য ফলপ্রাপ্তি ব্যক্ত হইয়াছে ৷ যিনি গুণাতীত তিনিই ভগবানের সাদৃশ্যপ্রাপ্ত ৷ তাঁহার কোনও আসক্তি নাই, অথচ তিনি কৰ্ম্ম করেন, পাপমুক্ত হইয়া মহাশক্তির আধার হন ও সেই শক্তির সর্বকার্য্যে আনন্দিত হন ৷ সালােক্যও কেবল দেহপতনান্তর ব্রহ্মলােকগতি নয়, এই শরীরেও সালােক্য হয় ৷ দেহযুক্ত জীব যখন তঁহার অন্তরে পরমেশ্বরের সহিত ক্রীড়া করেন, মন তাহার দত্ত জ্ঞানে পুলকিত হয়, হৃদয় তাহার প্রেমস্পর্শে আনন্দপুত হয়, বুদ্ধি মুহুর্মুহুঃ তাহার বাণী শ্রবণ করে ও প্রত্যেক চিন্তায় তঁাহারই প্রেরণা জ্ঞাত হয়, ইহাই মানবশরীরে ভগবানের সহিত সালােক্য ৷ সাযুজ্যও এই শরীরে ঘটে ৷ গীতায় তাহার মধ্যে নিবাস করার কথা পাওয়া যায় ৷ যখন সৰ্ব্বজীবে তিনি, এই উপলব্ধি স্থায়ীভাবে থাকে, ইন্দ্রিয়সকল তাহাকেই দর্শন করে, শ্রবণ করে, আঘ্রাণ করে, আস্বাদন করে, স্পর্শ করে, জীব সৰ্ব্বদা তাঁহার মধ্যে অংশভাবে থাকিতে অভ্যস্ত হয়, তখন এই শরীরেও সাযুজ্য হয় ৷ এই পরম গতি সম্পূর্ণ অনুশীলনের ফল ৷ কিন্তু এই ধর্মের অল্প আচরণেও মহতী শক্তি, বিমল আনন্দ, সুখপূর্ণ শুদ্ধতা লাভ হয় ৷ এই ধৰ্ম্ম বিশিষ্টগুণসম্পন্ন লােকের জন্য সৃষ্ট হয় নাই ৷ ভগবান বলিয়াছেন, ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র, পুরুষ, স্ত্রী, পাপযােনিপ্রাপ্ত জীবসকল পৰ্য্যন্ত তাঁহাকে এই ধৰ্ম্ম দ্বারা প্রাপ্ত হইতে পারে ৷ ঘাের পাপীও তাহার শরণ লইয়া অল্পদিনের মধ্যে বিশুদ্ধ হয় ৷ অতএব এই ধৰ্ম্ম সকলের আচরণীয় ৷ জগন্নাথের মন্দিরে জাতিবিচার নাই ৷ অথচ ইহার পরমগতি কোনও ধৰ্ম্মনির্দিষ্ট পরমাবস্থার ন্যুন নয় ৷









Let us co-create the website.

Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.

Image Description
Connect for updates